আমরা বলবো না যে তারাবীর নামায ৮ রাকাত পড়লে ঠিক হবে অথবা হবে না। আপনি দেখছেন যে খানায়ে কাবাতে পড়া হচ্ছে ২০ রাকাত। মসজিদে নববীতে পড়া হচ্ছে ২০ রাকাত। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম শেষ রাতে ঘুম থেকে উঠে সব সময় নিয়মিতই ৮ রাকাত নামায পড়তেন। আর এ আট রাকাতের পর তিনি বিতর পড়তেন ৩ রাকাত। এটা আয়িশা সিদ্দীকা (রা.) কর্তৃক বর্ণিত হাদীস। ‘কিয়ামুল লাইল’ মানে হচ্ছে রাত্রিতে দাঁড়ানো। রাত্রিতে দাঁড়িয়ে নামায পড়া। এটা হলো ‘কিয়ামুল লাইল’ যা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম করতেন। আয়িশা (রা.) বলেছেন: “ফি রামাদান ওয়াফি গাইরিহি”। অর্থাৎ তিনি রমাযানেও করতেন এবং রমাযানের বাইরেও করতেন। মানে নিয়মিতই তিনি এটা করতেন, জীবনব্যাপী এটা করেছেন [সহীহ বুখারী: ৩৩৭৬]। এটা তারাবী নামায কোথাও বলা নেই। এটাকে কোনো লোক মনে করেন তারাবী নামায। এ নিয়ে কোনো ঝগড়ার প্রয়োজন নেই। এ নিয়ে ফিতনা ফ্যাসাদ সৃষ্টি করা ঠিক হবে না। কলহ বিবাদ সৃষ্টি করা মোটেই ঠিক নয়। ৮ রাকাত সুন্নাত পড়া যদি দোষ হয় তাহলে তার চেয়ে অনেক বেশি দোষ হবে এ নিয়ে গন্ডগোল করা। যে দোষের অপকারিতা অনেক বেশি।
তারাবির মাসায়ালা
মাসয়ালা: বিশ রাকাত তারাবির নামাজ বালেগ পুরষ-মহিলা সবার ওপর সুন্নতে মোয়াক্কাদা। অসুস্থ ও রুগী ব্যক্তির ওপর তারাবি জরুরি নয়, তবে কোনো কষ্ট না হলে তাদেরও পড়া মুস্তাহাব। -রদ্দুল মুহতার: ১/৭৪২
মাসয়ালা: তারাবির নামাজ জামাতে আদায় করা মুস্তাহাব, একাকি আদায় করলেও আদায় হয়ে যাবে। -বাদায়েউস সানায়ে: ১/২৯০
মাসয়ালা: কারো যদি তারাবির জামাত থেকে কিছু রাকাত ছুটে যায় তাহলে বেতরের নামাজের পর তা পড়ে নিবে। -রদ্দুল মুহতার: ২/৪৪
মাসয়ালা: নাবালেগ হাফেজের পিছনে বালেগ পুরুষ মহিলা কারো জন্যই ইক্তিদা করা বৈধ নয়। -মাজমাউল আনহুর: ১/১৬৭, হেদায়া: ১/২৩৮, আল বাহরুর রায়েক: ১/৩৫৯
মাহে রমজানের রাতে তারাবি নামাজ জামাতে আদায়ের জন্য ধর্মপ্রাণ মুসল্লিরা প্রতিদিন মসজিদে সমবেত হন। দেশের প্রতিটি মসজিদে একই পদ্ধতিতে খতমে তারাবি পড়ার লক্ষ্যে ইসলামিক ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ রোজার প্রথম ছয় দিন দেড় পারা করে ও পরে লাইলাতুল কদর পর্যন্ত বাকি ২১ দিন এক পারা করে তিলাওয়াত করার পরামর্শ দিয়েছে। যেন স্থান পরিবর্তন করলেও কোনো মুসল্লি খতমে তারাবিতে কোরআন তিলাওয়াতে শরিক হওয়ার ধারাবাহিকতা থেকে বঞ্চিত না হন।